স্মৃতি ও তার খোঁজ
ফোন গ্যালারিতে একটা ছবি রাখা ছিলো। সন্তর্পণে। কিসের ছবি, কার ছবি, তা জানতে চাইলে উত্তর মিলবে না। তার পেলব পাপড়ি বা অঙ্গসংগঠন অথবা সমাজকে তুষ্ট করা তার দু’ঠোঁটের হাসির আভাস সেই উত্তর দেবে না। শুধু এই জেনেই কৌতূহল নিরসন করতে হবে যে, তার অস্তিত্ব সময়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামার অনিচ্ছা নিয়ে থেমে গিয়েছে। আমার সাথে তার রোজ দেখা হতো। ছবির মধ্যে দিয়েই সেই দেখা, যে দেখা একেবারে নিঃস্বার্থ ছিলো না। তাকে দেখার ফলাফল হিসাবে আমি তার সম্পর্কজড়িত স্মৃতিকে সজাগ রাখতাম। স্মৃতির নিকটতম স্মৃতিকে মনে করার ক্লান্তি থেকে মুক্ত থাকতে পারতাম। তবে নিরঙ্কুশ ভাললাগা বড়ই দুর্লভ। তাই আমার পূর্বোল্লিখিত সুবিধাকে অনুসরণ করে আসতো, তাকে নিয়ে সমাজের নানা আলোচনা- যেমন স্বাস্থ্যকর আলোচনা, উদ্বেগ, হতাশা, উৎসাহ এমনকি উল্লাস। কিন্তু সামাজিকতার বশবর্তী আমি সবটাই গ্রহণ করার চেষ্টা করতাম। সেই সমাজগ্রাহ্য হওয়া আমার তার সাথের যে যোগ, তাকে একটু একটু করে মাটি আলগা করে দিচ্ছিলো। যেন কোনো এক চোরারোগ তার স্মৃতিকে আমার কাছে ভঙ্গুর করে তুলছিলো। সে তার অস্তিত্ব নিয়ে অস্পষ্ট হয়ে উঠছিলো আমার মস্তিষ্কে, ধীরে। অতঃপর এক অজানিত অসহায়তা থেকে আমি তার সেই ছবিটা গ্যালারি থেকে মুছে দিলাম।
সেদিন আমি বুঝতে পারলাম, বাঁধন কাটানো যায় তার সাথেই যার সাথে সামাজিকতাকে অস্বীকার করে এক নামহীন সম্পর্ক স্থাপন করতে পারা যায়।